Home ভ্রমন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

প্রাণচাঞ্চল্য আর প্রাচুর্য ভরা আমাদের এই বাংলাদেশ। কত শত সুখ-দুঃখের ইতিহাস রয়েছে বাংলাকে ঘিরে। জমিদারি প্রথা থেকে আজ আমরা আধুনিক রাষ্ট্রে উত্তীর্ণ হয়েছি। কিন্তু সেই ইতিহাসের আর কালের সাক্ষী হয়ে আজও অনেক কিছু সবাইকে আকৃষ্ট করে। তেমনি এক নিদর্শন জমিদারি প্রথার জমিদার বাড়ি। শুধু সম্পদেই নয়, শিল্পীর নিপুণ হাতের কাজ, নির্মাণ শৈলী মুগ্ধ করে জমিদার-নবাবদের সেই প্রাচীন প্রাসাদ। সে রকমই এক প্রাসাদ মানিকগঞ্জের বালিয়াটি জমিদার বাড়ি।

বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি প্রায় ২০০ বছর পুরাতন। এই জমিদারবাড়িটির উত্তরে একসময় গাজীখালী নদী প্রবাহিত হত। ১৬০০০ বর্গমিটার আয়তনের বিশাল এই জমিদারবাড়িটিতে প্রায় ২০০টি কক্ষ রয়েছে। জমিদারবাড়ির পেছনে অবস্থিত পুকুরের এক প্রান্তে চারটি ঘাট আছে এবং অপর প্রান্তে বেশকিছু শৌচাগার রয়েছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
জমিদার বাড়ির প্রবেশদার

কারুকার্য খচিত মনোমুগ্ধকর প্রতিটি ভবনের দেয়ালই জমিদারদের আভিজাত্য এবং রুচির পরিচয় ধরে রেখেছে। বেশ উঁচু জমিদার বাড়ির ঢোকার মুখেই রয়েছে বিশাল দুটি সিংহদ্বার। সিংহদ্বার পেরোলেই খোলা চত্বর। তারপরই রয়েছে জমিদার বাড়ির মূল ভবন। জমিদার বাড়ির আঙিনায় রয়েছে ৪টি বিশাল ভবন, বন্দিশালা, গোলাঘর, রংমহল, দরবার হল, অন্দর মহল। আরো আছে অন্দর মহলের শানবাঁধানো ৪ ঘাটলার দীঘি। আনুমানিক ১৭৯০ খৃষ্টাব্দে জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয়। শোনা যায়, জমিদার বাবুরা বেশির ভাগ সময়ই রংমহলে কাটাতেন। রংমহলে তারা সুর, সরাব আর নর্তকীদের নৃত্যের ঝংকারে মগ্ন থাকতেন। কালের সাক্ষী জমিদার বাড়িতে বর্তমানে রংমহলের কক্ষটিতে শোভা পাচ্ছে জমিদারের ব্যবহার্য বিভিন্ন আসবাবপত্র। রংমহলে রাখা কাচের আয়না ও শ্বেতপাথরের দুটি গাভি খুব সহজেই সকলের দৃষ্টি কাড়ে।

প্রতিদিনই এখানে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা ভিড় করেন। ঢাকা শহরের কাছেই মানিকগঞ্জে আপনি খুব সহজেই যেতে পারেন। পরিবার এবং বন্ধুদের নিয়ে একদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন ইতিহাসের নিরব সাক্ষী বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। এই বাড়ির সৌন্দর্য আপনাদের মুগ্ধ করবে। দীঘির পাড়ে বসে কিছুটা সময় কাটিয়ে একরাশ ভালোলাগা নিয়ে ফিরে আসবেন এটা বলা যায়।

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

কিভাবে পৌঁছাবেন
ঢাকার গাবতলি থেকে ‘এস.বি লিংক’ বাস যোগে যতে পারেন সরাসরি বালিয়াটি। সময় লাগবে দুই ঘণ্টার মত। এছাড়াও গুলিস্তান থেকে বেশকিছু বাস যেমনঃ বিআরটিসি বাস সার্ভিস, শুভযাত্রা বাস সার্ভিস, পদ্মালাইন ইত্যাদি মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপর মানিকগঞ্জের থেকে আসতে হবে বালিয়াটি।

থাকা খাওয়ার জন্য গেস্টহাউজ, বোডিং, রেস্টুরেন্ট ও হোটেল রয়েছে পর্যাপ্ত।