Home লাইফস্টাইল সবার মাঝেও একাকিত্ব দূর করুন

সবার মাঝেও একাকিত্ব দূর করুন

আমরা বাস করছি এমন একটা সময়ে যখন টিভি, স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপ ছাড়া জীবনের কথা ভাবাই যায় না। কুশল বিনিময় থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা সবটাই এখন আমরা জানাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে ভেবে দেখুন তো, প্রযুক্তি আমাদের কাছে আনার বদলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে না তো?

প্রযুক্তিই যখন দূরত্বের কারণ
আমরা এখন কেনাকাটা করি অনলাইনে, সবার সঙ্গে যোগাযোগ হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ঘরে বসেই করতে পারি অফিসের কাজ। পড়াশোনা থেকে বিনোদন—সবকিছুই সহজ হয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে। কিন্ত একবার ভেবে দেখুন  প্রযুক্তির ওপর এই নির্ভরশীলতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কগুলোর ওপর। সারাদিন বাইরের কাজ শেষে বাড়ি ফিরেও আমরা ব্যস্ত থাকি টিভি কিংবা ফেইসবুক নিয়ে। পরিবারের মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলারও সময় হয় না আমাদের।

আর বন্ধুদের কথাই ধরুন, সোশাল মিডিয়াতে তো এখন সবাই কানেক্টেড। কার জীবনে কি ঘটছে, তা জানতে এক মুহূর্তও দেরি হয় না। কিন্ত কলেজ জীবনের প্রিয় বন্ধুটিকে সামনাসামনি শেষ কবে দেখেছেন মনে করতে পারবেন কি? ভেবে দেখুন তো, এভাবে কি আপনজনদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে না আপনার ?

প্রয়োজন পরিবর্তনের
একদিনের জন্য জীবন থেকে প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে দিন তো, তারপর দেখুন না কি হয়! বাড়িতে ফিরে টিভির পর্দায় চোখ না দিয়ে খোঁজ নিন আপনার সন্তান স্কুলে আজ কি কি করেছে। স্ত্রী কিংবা স্বামীর দিন কেমন কাটলো জেনে নিন তার চোখে চোখ রেখে।রাতের খাবারটা ভালো হয়েছে? রাঁধুনির  প্রশংসা করুন প্রাণ খুলে, কিংবা তাকে আজ সাহায্য করুন খাবার শেষে থালবাসন ধুয়ে রাখতে, সঙ্গে চলুক টুকটাক কথাবার্তাও।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রযুক্তির প্রভাব জীবনে যত কম থাকবে, পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কও হবে তত গভীর। ছুটির দিনগুলোতে ভিডিও গেইম না খেলে প্রিয়জনকে নিয়ে মেতে উঠুন লুডু বা তাস খেলায়। বাড়িতেই আজ হয়ে যাক বনভোজন, পরিবারের সবাই মিলে হইচই করে আজ রান্না করুন নতুন কিছু। ঘুরতে চলে যান আশেপাশে কোথাও, রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে চুমুক দিন গরম চায়ে।

প্রযুক্তি ছাড়া কিভাবে খুশি করবেন  সবাইকে? 
প্রযুক্তিকে  বিদায় বলে দিয়েছেন, কিন্তু আপনজনদের খুশি রাখবেন কিভাবে?এবার জেনে নিন তার  উপায় –

  • একদম ছোট্ট শিশুরা কথার চেয়ে গা ঘেঁষা আদর বেশি ভালোবাসে। গালের সঙ্গে গাল লাগিয়ে কিংবা কোলে নিয়ে বুকে চেপে ধরে যখন কোনো শিশুকে আদর করবেন, তখন সে খুবই খুশি হবে। আপনার সঙ্গে গড়ে উঠবে তার বিশ্বাস এবং নির্ভরতার সম্পর্ক।
  • যেসব বাচ্চাদের বয়স এক থেকে তিনের মধ্যে, তারা অনেক কথাই বুঝবে। এই বয়সের বাচ্চারা একটু সুড়সুড়ি, দুষ্টুমি কিংবা মজার কোনো খেলা—এতেই খুশি হয়। এছাড়া গল্পের বই পড়ে শোনাতে পারেন ঘুম পাড়ানোর সময় ।
  • স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের আবার নিজস্ব একটি জগত থাকে। তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করুন ছোট্ট কোনো প্রশ্ন দিয়ে, এরপর জানার চেষ্টা করুন তার ভাবনা টুকটাক প্রশ্ন করে। এমন কোনো খেলা কিংবা কাজ করুন যা বাচ্চাটি আগে থেকেই পারে। তাদের পছন্দকে গুরুত্ব দিন, তাদের পছন্দের কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলুন।
  • বড়দের বেলায় সম্পর্ক স্থাপনের সবচেয়ে ভাল উপায় হল আলাপ আলোচনা। নিজের দীর্ঘদিনের সঙ্গীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান তার সঙ্গে সম্পর্ক প্রাণবন্ত রাখতে। বন্ধুবান্ধব কিংবা আপন আত্মীয়দের বেলায়ও তাই, আপনার সময় তাদের আপনার জীবনে ধরে রাখবে।