খেজুর নিরাময় ক্ষমতা সম্পন্ন ফল বলে পরিচিত। ফলটি অত্যন্ত সুস্বাদু বলে বেশীরভাগ মানুষ এটি খেতে পছন্দ করেন। আমাদের দেশে রোজার সময় ইফতারিতে খেজুর খাওয়া হয়। খেজুর অনেক পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। খেজুরে প্রোটিন বিদ্যমান থাকায় ফিট থাকতে সাহায্য করে এবং মাসলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। খেজুরে প্রচুর ভিটামিন থাকে ফলে নিয়মিত খেজুর খেলে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হয় না। খেজুরে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে যা হাড়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক খেজুরের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা। স্বাস্থ্য গুণে ভরপুর খেজুর–
স্বাস্থ্যকর খাবারঃ খেজুরে কোনো কোলেস্টেরল এবং বাড়তি চর্বি থাকে না। ফলে আপনি সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করতে পারেন।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ নানা ধরনের ভিটামিন থাকায় খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করলে রাতকানা রোগ ভালোও হতে পারে।
রক্ত বৃদ্ধি করেঃ যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছে, তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারে। এই ফল শরীরের রক্তের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ক্ষুধা কমায়ঃ কয়েকটা খেজুর খেলেই আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষুধা নিবারণ করতে পারেন। এটি পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আর এই কয়েকটি খেজুর শরীরের শর্করার চাহিদাও পূরণ করবে। ফলে আপনি শর্করাজাতীয় অন্যান্য খাবার না খেলেও খুব একটা সমস্যায় পড়বেন না।
হজমে সহায়কঃ ‘বেহিসাবি’ খাওয়া-দাওয়া করলে অনেক সময় বদহজম হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি দিতে পারে কয়েকটি খেজুর।
কোষ্টকাঠিন্য দূর করেঃখেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাক হতে সাহায্য করে এবং কোষ্টকাঠিন্য রোধ করে। ডায়রিয়া হলে কয়েকটি খেজুর খান, বেশ উপকার পাবেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ অবাক হলেও সত্য, খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এক গবেষণায় গেছে, খেজুর পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
হৃদ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারিঃ হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে খেজুর। খেজুরে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে যা আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদপিণ্ডের অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা করে বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে।
ব্লাড প্রেসার কমায়ঃ খেজুর খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। পটাসিয়াম হৃদপিণ্ডকে সঠিকভাবে কাজ করতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
রাতকানারোগ নিরাময় করেঃ
খেজুরের উপকারিতা অপরিসীম। কান, নাক ও গলার বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে খেজুর। খেজুর চূর্ণ করে পেস্ট তৈরি করে চোখের উপরে ও চারপাশে লাগিয়ে রাখলে অথবা নিয়মিত খেজুর খেলে রাতকানা রোগের পুনরাবৃত্তি কমানো যায়।
অ্যানেমিয়া দূর করঃ খেজুরে আয়রন থাকে বলে অ্যানেমিয়া নিরাময়ে সাহায্য করে। যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।দেখা গেছে, খেজুর পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
প্রদাহ কমায়ঃ খেজুর ম্যাগনেসিয়ামে সমৃদ্ধ যার প্রদাহ রোধী গুণ আছে। গবেষণায় জানা যায়- শরীরের প্রদাহ নির্দেশক উপাদান যেমন- CRP, TNF এবং IL6 ইত্যাদি কমে যায় যখন ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ধমনী প্রাচীরের ইনফ্লামেশন কমতেও সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়ামে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, আরথ্রাইটিস, আলঝেইমার্স ও অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ সারাতেও অত্যন্ত কার্যকরী।