লেবুর উপকারিতার কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু লেবুর খোসারও যে অনেক গুণ রয়েছে তা হয়ত অনেকেই জানি না। তাই খাবার শেষে লেবুর খোসা ফেলে না দিয়ে আমরা ব্যাবহার করতে পারি নিত্য দিনের নানা কাজে। অধিকাংশ মানুষই লেবু খাওয়ার পরে তার খোসা ফেলে দেন। কিন্তু লেবুর খোসার উপকারিতা কি আপনি জানেন? জানলে সত্যিই অবাক না হয়ে পারবেন না। লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, পেকটিন, ফাইবার এবং মিনারেলস যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আসুন জেনে নিই লেবুর রসের পাশাপাশি লেবুর খোসার কার্যকারিতা সম্পর্কে-
ক্যান্সার প্রতিরোধকঃ
মারণ রোগ ক্যান্সার। আর এ মারণ রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে লেবুর খোসা। চিকিৎসকরা জানান, চায়ের সঙ্গে লেবুর খোসা মিশিয়ে খেলে আমাদের শরীরের ক্যান্সার কোষ তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সানবার্ন প্রতিরোধঃ
সৌন্দর্যের দিক থেকে লেবুর খোসা সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করলে ত্বকে সানবার্ন প্রতিরোধ করা যায়।
ভিটামিন-সিঃ
লেবুর খোসায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি থাকে। যা আমাদের হাড়কে আরও মজবুত করতে সাহায্য করে। হাড়ের বিভিন্ন অসুখ যেমন, পলিআর্থারাইটিস, অস্টিওপরোসিস এবং বিভিন্ন প্রকার আর্থারাইটিস প্রতিরোধ করে।
ওজন কমায়ঃ
অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য লেবুর খোসার উপকারিতা অনেক।
স্ট্রেস কমায়ঃ
শরীর থেকে স্ট্রেসও কমায় লেবুর খোসা।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ
লেবুর খোসা আামদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বিভিন্ন হৃদরোগ যেমন স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ
হজম শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় লেবুর খোসা।
চিনি ঝরঝরে রাখতেঃ
রান্নাঘরের চিনির কৌটায় রেখে দিতে পারেন এক টুকরো লেবুর খোসা। এর ফলে চিনি থাকবে একেবারে ঝরঝরে।
মুখের দুর্গন্ধ এড়াতেঃ
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে জুড়ি নেই লেবু বা কমলার খোসার। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এবং কিছুক্ষণ পরপর সারাদিন লেবু বা কমলার খোসা চিবাতে পারেন। এতে যেমন আপনার মাড়ি ভালো থাকবে তেমনি নিঃশ্বাসে থাকবে প্রাকৃতিক সজীবতা।
পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতেঃ
আলমারি বা ওয়ারড্রবকে কীটপতঙ্গ থেকে মুক্ত রাখতেও লেবুর খোসার জুড়ি নেই। লেবুর শুকনো খোসা শুকিয়ে একটি ছোটো পলিপ্যাকে নিয়ে মোজা কিংবা অন্তর্বাসের ড্রয়ারে রেখে দিন। দুর্গন্ধ তো দূর হবেই, সাথে সাথে আপনার পোশাক হবে দারুণ সুরভিত।
ফ্রিজ সতেজ রাখতেঃ
ফ্রিজের ভেতরে দুর্গন্ধ এড়াতে রেখে দিতে পারেন দুই এক টুকরো লেবুর খোসা। এতে ফ্রিজ থাকবে লেবুর সুগন্ধময়।
ডাস্টবিনে দুর্গন্ধ এড়াতেঃ
দুর্গন্ধময় ময়লা-আবর্জনায় লেবুর খোসা নিক্ষেপ করুন। লেবুর খোষা দুর্গন্ধ শুষে নিবে।
চায়ের কেটলি বা কফি পট পরিষ্কার করতেঃ
জমে থাকা চা কিংবা কফির পট পরিষ্কার করতে পারেন লেবুর খোসা দিয়ে। এক্ষেত্রে কেটলিতে পানি নিয়ে লেবুর খোসা দিয়ে কিছুক্ষণ সেদ্ধ করতে হবে। এরপর ময়লা জায়গা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
কাটিং বোর্ড পরিষ্কার করতেঃ
কাটিং বোর্ডের সব ময়লা দাগ পরিষ্কার করতে লেবুর খোসা কেটে কয়েক ঘণ্টা রেখে দিন। দেখবেন একেবারে ঝকঝকে হয়ে গেছে।
মাইক্রোওয়েভ পরিষ্কার করতেঃ
মাইক্রোওয়েভের তেল চিটচিটে হলে বাটিতে পানি দিয়ে লেবুর খোসা ছেড়ে গরম করতে হবে। এরপর পানি দিয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এতেই মাইক্রোওয়েভ ঝকঝকে হয়ে যাবে।
ত্বক উজ্জ্বল করতেঃ
ত্বকে মেসেজ করে ধুয়ে ফেললে নরম, কোমল ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যায়।
বয়সের দাগ দূর করতেঃ
মানুষের যখন বয়স বাড়ে তখন শরীরে বয়সের দাগ পড়ে যায়। এই দাগের ওপর লেবুর খোসা ঘসলে তা উঠে যায়।
স্কিন টনিক হিসাবেঃ
লেবুর খোসা ত্বকে অল্প ঘষে ধুয়ে ফেললে এটি ত্বকের স্কিন টনিক হিসাবে কাজ করবে।