Home লাইফস্টাইল ভালোবাসার অপর নাম মা

ভালোবাসার অপর নাম মা

মা হচ্ছেন একজন পূর্ণাঙ্গ নারী, যিনি গর্ভধারণ, সন্তানের জন্ম তথা সন্তানকে বড় করে তোলেন – তিনিই অভিভাবকের ভূমিকা পালনে সক্ষম ও মা হিসেবে সর্বত্র পরিচিত।প্রকৃতিগতভাবে একজন নারী বা মহিলাই সন্তানকে জন্ম দেয়ার অধিকারীনি। গর্ভধারণের ন্যায় জটিল এবং মায়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অবস্থানে থেকে এ সংজ্ঞাটি বিশ্বজনীন গৃহীত হয়েছে। মা, কখনো তা গর্ভধারিণী, জন্মদাত্রী আবার কখনো জননী কখনোবা মাতা। মাকে নিয়ে যতই সমার্থক শব্দ থাকুক না কেন মা ডাকের একটিই অর্থ, আর তা হচ্ছে পৃথিবীর সকল শান্তি একটি জায়গায় বন্দি। আর সবশেষ, ভালোবাসার অপর নাম মা

মায়ের ভালোবাসার কোনো সীমা নেই। এই ভালোবাসার নেই কোনো আকার। একটি সন্তানের জন্ম থেকে শুরু করে তাকে আজীবন যেই মানুষটি তার বুকের সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে বড় করে তোলেন সেই মানুষটি হচ্ছেন মা। আর এই মাকেই বলে হয় না যে তাকে কতটা ভালোবাসি। তাকে সময় দেওয়ার মতো সময় আমাদের হয়ে ওঠে না। কিন্তু তার সময়ের কমতি হয় না আমাদের জন্য।

সন্তানের খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো হচ্ছে কিনা, তার পড়াশুনা, তার কাজ তার যাবতীয় দিকে মায়ের থাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। আর সেই মায়ের কোনো কাজে আমাদের থাকে গড়িমসি। মাকে ভালোবাসাটা আমাদের মাঝে সুপ্ত রয়ে যায়। আর মায়ের ভালোবাসা যেন তার প্রতিটি কাজে ব্যক্ত হয়। ভালোবাসার এমন অদ্ভুত ক্ষমতা কেবল মায়েরই থাকে।

মাকে ভালোবাসতে না লাগে কোনো দিন, না লাগে কোনো মাস। তবে মায়ের ভালোবাসাকে সম্মান দেখাতে একটি দিন মাকে উৎসর্গ করা যেতে পারে। আর তাই তো সারা বিশ্বে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আপনার মায়ের প্রতি হয়তো এই একটি দিনে ভালোবাসা বেড়ে যাবে না কিংবা কোনো যাদুর কাঠি দিয়ে আপনি আপনার মায়ের কাছে করা সমস্ত ভুল সুধরে নিতে পারবেন না! কিন্তু নতুন করে সব শুরু তো করতে পারবেন। মাকে জড়িয়ে ধরে তাকে `ভালোবাসি মা` তো বলতে পারবেন।

মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে “মা দিবস” হিসাবে উদযাপনের ঘোষণা দেয়া হয় ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেসে। আর তখন থেকেই এই দিনে সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মা দিবস। বিশ্বের প্রায় ৪৬টি দেশে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয় হয়। কথিত আছে, ব্রিটেনেই প্রথম শুরু হয় মা দিবস পালনের রেওয়াজ, কেননা সেখানে প্রতিবছর মে মাসের চতুর্থ রোববারকে মাদারিং সানডে হিসাবে পালন করা হতো। তবে সতের শতকে মা দিবস উদযাপনের সূত্রপাত ঘটান মার্কিন সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্টস। মায়ের সঙ্গে সময় দেয়া আর মায়ের জন্য উপহার কেনা ছিল তাঁর দিনটির কর্মসূচিতে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়াতে প্রথম মা দিবস পালন করা হয় ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২ জুন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উহলসন সর্বপ্রথম মা দিবসকে সরকারি ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করেন। মা দিবসের উপহার সাদা কার্নেশন ফুল খুব জনপ্রিয়।

মায়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের পছন্দের কথা পরে ভাবেন। আগে ভাবেন সন্তানের পছন্দের কথা। এই মা দিবসে আপনি না হয় তার পছন্দের কিছু দিয়ে মাকে সারপ্রাইজ দিয়ে ফেলুন। আপনার পথের দিকে চেয়ে এই মা-ই হয়তো রাতের পর রাত না খেয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করেছেন। আপনার মুখে ভাত তুলে দিয়ে তিনি খেয়েছেন। মায়ের খাবার সেই খবরটা হয়তো আমরা রাখতে পারিনা। তাই মা দিবসে মাকে নিয়ে না হয় কোথাও থেকে ঘুরে আসুন আর মায়ের পছন্দের খাবারটা আজ না হয় আপনি তার পাতে বেড়ে দিন।

মায়ের ভালোবাসার সম্মান দেওয়া আমাদের কর্তব্য। যেই মা আমাদের দশ মাস দশ দিন পেটে রেখে এই দুনিয়ার আলো বাতাস দেখাচ্ছে তার জন্য একটি দিন খুব কম। তাও তাকে বছরের ৩৬৫ দিন থেকে একটি দিন উৎসর্গ করাই যায়। তাই মাকে ভালোবেসে তার সঙ্গী হোন। আজ আপনি যেমন মায়ের ভালোবাসা ছাড়া অচল তেমনি আপনাকেও মায়ের প্রয়োজন। মায়ের ভালোবাসা সন্তানের জন্য আশীর্বাদ। আর মা হচ্ছে সন্তানের জান্নাত। মাকে যতটা পারুন সময় দিন আর এই মা দিবসে মাকে বলেই ফেলুন তোমাকে অনেক ভালোবাসি মা।