Home লাইফস্টাইল তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় করণীয়

তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় করণীয়

ত্বক সাধারনত স্বাভাবিক, সংবেদনশীল, শুষ্ক ও তৈলাক্ত প্রকৃতির হয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও শুষ্ক তাদের অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন পড়ে। আজ আমরা জানবো তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় করণীয় সম্পর্কে-  

মধু: ত্বকের যত্নে মধু প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি তৈলাক্ত ত্বকের নানা রকমের সমস্যা, অস্বস্তিকর ‘ব্ল্যাকহেডস’ এবং লালচে দানা ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে টানটান করে ও আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

মুখ, গলা ও বুকে মধুর মাস্ক লাগান। শুকিয়ে গেলে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর পাতলা তোয়ালে ব্যবহার করে চাপ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন। মধুর প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ‘এক্সফলিয়েট’ করার ক্ষমতা থাকায় তা ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমায়। এটি ত্বকের ছিদ্র উন্মুক্ত করে ও বলিরেখা দূর করে।

চাইলে এর পরিবর্তে, মধুর সঙ্গে কাঠবাদামের গুঁড়া মিশিয়ে তা তৈলাক্ত ত্বকের উপর মালিশ করতে পারেন। পাঁচ থেকে দশ মিনিট অপেক্ষা করে হালকা গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন।

অ্যালোভেরা: সংবেদনশীল ত্বকের সুরক্ষায় অ্যালোভেরা তিন ভাবে কাজ করে।

– মুখ ও গলায় তাজা অ্যালোভেরার জেল লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এরপর ধুয়ে ফেলুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে বেশ উপকারী।

– অ্যালোভেরার পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিন। সেই পানিতে মধু মিশিয়ে মুখ ও গলায় লাগান। শুকিয়ে এলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তেল মুক্ত ত্বক পেতে নিয়মিত এটি ব্যবহার করুন।

– চার টেবিল-চামচ অ্যালোভেরার সঙ্গে দুই টেবিল-চামচ ওটামিল মেশান ও ঘন দ্রবণ তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে স্ক্রাব করুন। অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করে এই মিশ্রণ। এবং মুখ থেকে ময়লা ও ধুলাবালি দূর করতে সাহায্য করে।

কমলার খোসা: কমলার খোসা তৈলাক্ত ত্বক নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। এই ফলের খোসা কয়েকদিন শুকিয়ে তা ভালোভাবে গুঁড়া করে নিন। তারপর পানি অথবা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। হাতে তৈরি এই প্রাকৃতিক মাস্ক ত্বকের লোমকূপের ছিদ্র উন্মুক্ত করে পরিষ্কার করে এবং এর ‘অ্যাস্ট্রিনজান্ট’ উপাদান ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে।

লেবু: সমপরিমাণ লেবুর রস, গোলাপজল এবং গ্লিসারিন মিশিয়ে মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর তা ধুয়ে ফেলুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের নানারকম সমস্যা যেমন- ব্রণ, ফুস্কুড়ি এবং দাগ ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।

লেবুতে আছে জীবাণুনাশক উপাদান। তাই এটি তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে সবচেয়ে ভালো। গোলাপ জল অ্যান্টিসেপ্টিকের কাজ করে, তাই এটি ত্বক সতেজ রাখতে পরিষ্কারক ও টোনারের মতো কাজ করে। গ্লিসারিন ত্বক ঠিক মাত্রায় আর্দ্র করে। প্রতিদিন ত্বকের যত্ন নিতে এই মিশ্রণ কাঁচের বোতলে রেখে রেফ্রিজারেইটরে সংরক্ষণ করতে পারেন।

ভুট্টার গুঁড়া: এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ কার্যকর। গরম পানিতে দুই টেবিল-চামচ ভুট্টার গুঁড়া মিশিয়ে ঘন দ্রবণ তৈরি করতে হবে। এরপর তা পুরো মুখে মেখে নিন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

টমেটোর ফেইস প্যাক: এতে থাকে লাইকোপেন যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও আছে ভিটামিন এ এবং সি যা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। টমেটো প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি অতিরিক্ত তেল, ব্ল্যাকহেডস এবং দাগ কমাতে সাহায্য করে।

একটি টমেটো অর্ধেক করে কেটে তা চটকে নিন। বীজ আলাদা করতে তা ছেঁকে নিন। একটি তুলোর বল দিয়ে মুখে টমেটোর রস লাগিয়ে নিন। বাড়তি সুবিধার জন্য এতে মধু যোগ করতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য প্রতি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করুন।

কলার মাস্ক: কলা ও মধুর মাস্ক ত্বক প্রশমিত করে। একটি কলা ও এক টেবিল-চামচ মধু একসঙ্গে ব্লেন্ড করে তাতে কয়েক ফোঁটা লেবু বা কমলার রস যোগ করুন। মাস্কটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন ও পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আলতো করে মুছে ফেলুন। এই মাস্কের সঙ্গে সামান্য ময়েশ্চারাইজার মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বক আর্দ্র থাকবে।

কফি: কফির গুঁড়া খনিকটা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে তা মুখে ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। এই সুস্বাদু-সুগন্ধি স্ক্রাব তৈলাক্ত ত্বক এক্সফলিয়েট করতে বেশ কার্যকর।

বেইকিং সোডা: দুতিন টেবিল-চামচ পানির সঙ্গে এক টেবিল-চামচ বেইকিং সোডা মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। ত্বকে লাগান ও শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। বেইকিং সোডার আছে প্রদাহ বিরোধী ও জীবাণুনাশক উপাদান যা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী।