Home লাইফস্টাইল চুলের যত্নে নারকেল তেল

চুলের যত্নে নারকেল তেল

নানী-দাদীদের রূপচর্চার উপাদানগুলো কিন্তু একেবারে ফেলে দেবার মতো নয়। যেখানে দামি দামি প্রোডাক্ট সেখানে চুলের স্বাস্থ্য সারিয়ে তুলতে পারছে না সেখানে হাজার বছরের পুরনো উপাদান খুব সাধারণ নারিকেলের তেলই আপনার একমাত্র ভরসা হতে পারে। কোকোনাট অয়েলের নিজস্ব কোন প্রোটিন উপাদান নেই তবে এটি চুলের নিজস্ব প্রোটিন উপাদান ধরে রাখতে সাহায্য করে যার ফলে নিয়মিত (প্রতিদিন কিন্তু নয়) চুলের নারিশমেন্টের জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী। নারকেল তেলের উপাদানগুলো চুলে প্রতিরক্ষা বেষ্টনী তৈরি করে যার ফলে ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়া তেল একধরনের পরিষ্কারক। চুল ও মাথার ত্বকে কিছু ময়লা থাকে যেগুলো পানিতে দ্রবীভূত নয় তেলে  দ্রবীভূত। এসব ময়লা তেলে দ্রবীভূত বলে তেল মাখার পর চুলে শ্যাম্পু করলে সহজেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়। আসুন জেনে নিই চুলের যত্নে নারকেল তেল এর উপকারিতা সম্পর্কে-

নারকেল তেলে বিদ্যমান উপাদানগুলোর কার্যকারিতা

(১) প্রাকৃতিক নারকেল তেলে রয়েছে ভিটামিন ই ছাড়াও  Lauric Acid এবং Linolec acid মতো ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো । এইসব উপাদানগুলোর উপস্থিতির কারণে বিভিন্ন কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহারের পরেও চুলের প্রোটিন ক্ষতি প্রতিরোধে সাহায্য করে ভেতর থেকে শক্তি জুগিয়ে থাকে যার ফলে চুলের ভাঙন কমে ।

(২) আপনি কি জানেন অন্যান্য তেলের তুলনায় নারকেল তেল চুলের ভেতরে সহজে প্রবেশ করতে পারে ফলে শ্যাম্পু (সালফেটযুক্ত) ব্যবহারের ফলে কিউটিকলে যে পরিমাণ ক্ষতি সাধন হয় তা নারকেল তেলের সহজ প্রবেশ এবং প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ক্ষতি কমিয়ে আনে ?

(৩) সালফেট বা ক্ষতিকর কেমিক্যাল চুল থেকে কিউটিকল আলাদা করে ফেলে । এই কিউটিকল মূলত চুলের ভেতরের কোষগুলোকে বাইরের ক্ষতিকর জীবাণু থেকে রক্ষা করে । আদ্রতার সংস্পর্শে এলেই চুলে ফ্রিজিনেস চলে আসে এবং চুল ড্রাই হয়ে যায়।

কাজেই এসব সমস্যা থেকে চুলকে রক্ষা করতে দরকার পড়ে যত্নের । সেক্ষেত্রে এমন একটি উপায় চাই যা চুলকে গভীর থেকে নারিশ করবে এবং স্বাস্থ্যবান করে তুলবে। কাজেই কোকোনাট অয়েল আসলে কতটা কার্যকরীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা দূর করুন।

ডিপ কন্ডিশনার হিসেবে নারকেল তেলের কার্যকারিতা –

বাজারের হাজারটা প্রোডাক্ট মেখে চুলে তাৎক্ষনিক ফলাফল পেলেও আদোতে আপনার চুল কিন্তু দুর্বল , রুক্ষই রয়ে গেল। কাজেই চুলের উপরে কেবল প্রলেপ না লাগিয়ে যদি চুলের জন্যই তো মূলত ডিপ কন্ডিশনিং-এর জন্য সবচেয়ে রিলায়্যাবল উপাদানটি হল নারকেল তেল। আগেই বলেছি , কোকোনাট অয়েল চুলের প্রোটিন বজায় রাখতে সাহায্য করে। কেমিক্যাল ব্যবহার , অযত্নের কারণে চুল ধীরে ধীরে তার প্রোটিন হারিয়ে ফেলে। নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহারে চুলের প্রোটিন লেভেল ঠিক থাকে। এবং চুলের ময়েশ্চারকে ধরে রাখে যার ফলে চুল হয় সিল্কি এবং শাইনি।

নারিকেল তেলে রয়েছে ভিটামিন ই , কে এবং আয়রন । এই উপাদানগুলো খুব সহজে স্কাল্পের মাধ্যমে চুলে গিয়ে পৌছায় । স্কাল্পে নারিকেল তেল ম্যাসাজের ফলে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায় এবং চুল নারকেল তেলে বিদ্যমান সব ভিটামিন সহজেই অ্যাবজর্ব করতে পারে। আর এই ভিটামিনগুলো প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগানোর সাথে সাথে স্কাল্পের ময়েশ্চার ধরে রাখে এবং খুশকির উপস্থিতি কমে । আর এভাবেই মূলত নারকেল তেল চুলের গভিরে প্রবেশ করে হেয়ার ডিপ কন্ডিশনিং করে থাকে।