Home ভ্রমন আলোর শহর বারাণসী

আলোর শহর বারাণসী

দেশের বাইরে ভ্রমনের চিন্তা করলে সবার আগে মাথায় আসে প্রতিবেশি দেশ ভারত ভ্রমনের কথা| নিঃসন্দেহে এটি একটি উত্তম শহর। ভারতের অন্যতম শহর বারাণসী। ঘুরে আসতে পারেন এ শহর থেকে, যা আপনাকে সুন্দরের ছোয়ায় আছন্ন করবে কিছু সময়।

প্রাচীন ভারতের এক অন্যতম নিদর্শন আলোর শহর বারাণসী, গঙ্গার পশ্চিম তীরে বরুণা ও অসি নদীর মিলনস্থলে বিশ্বের ‘প্রাচীনতম জীবন্ত শহর’ এটি। অতীতের কাশী ই আজকের বারাণসী, যা হিন্দুধর্মের পবিত্রতার প্রতীক। পুরাণে বর্ণিত আছে, খ্রিস্টের জন্মের ১২০০ বছর আগে সুহোত্র-পুত্র কাশ্য এ নগরী পত্তন করেন।

বারাণসীকে বলা হয় The City of Light। গঙ্গা, গঙ্গার ঘাট, মন্দির, ভারতীয় সঙ্গীত, রাবড়ি-লস্যি-মালাই, অলিগলি-তস্য গলি, দোকানপাট, যানজট, ষাঁড়, বেনারসি শাড়ির দোকান, কাচের চুড়ি এ সব নিয়েই এক প্রাণবন্ত শহর বারাণসী।

হানাদারদের হানায় বার বার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এর অতীত, কিন্ত পুণের পেশোয়া, ইন্দোরের হোলকার, গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া এবং বারাণসীর রাজাদের হাতে মন্দির, ঘাট এবং শহর গড়ে উঠেছে আবার নতুন করে। বিশ্বনাথ মন্দির আর গঙ্গাতীরের প্রাচীন ঘাট হলো বারাণসীর প্রধান দর্শনীয় স্থান। এখানকার প্রধান ঘাটগুলোর মধ্যে রয়েছে – দশাশ্বমেধ, মণিকর্ণিকা, হরিশ্চন্দ্র, মানমন্দির, রাজেন্দ্রপ্রসাদ, পঞ্চগঙ্গা, রানিমহল, অহল্যাবাই ঘাট প্রভৃতি।

বর্তমান কাশী-বিশ্বনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন ইন্দোরের মহারানি অহল্যাবাই হোলকার১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে। পরবর্তীতে ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরের শিখরগুলো সোনা দিয়ে মুড়ে দেন পাঞ্জাব কেশরী রণজিত্‍ সিংহ। বিশ্বনাথ মন্দিরের বিপরীতে রয়েছে অন্নপূর্ণা মন্দির। মূল শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে রানি ভবানী প্রতিষ্ঠিত দুর্গামন্দির। এছাড়াও গোধুলিয়া থেকে ৩ কিলোমিটার দূর রয়েছে শ্বেতপাথরের তুলসী মানস মন্দির এবং বিদ্যাপীঠ রোডে আছে ভারতমাতা মন্দির। মহাত্মা গান্ধী ১৯৩৬ সালে উদ্বোধন করেন এই মন্দির।

এই মন্দিরের বিশেষত্ব হল এখানে মূর্তির বদলে রয়েছে পাথরের তৈরি ভারতের মানচিত্র। এখানেই গড়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহত্তম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় “বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU)”। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।

কীভাবে যাবেন:
ট্রেন: দিল্লি, আগ্রা, লক্ষ্ণৌ, মুম্বাই ও কলকাতা সহ একাধিক শহর থেকেবারাণসী পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ উপায় ট্রেন। বারাণসী জংশনের স্টেশন কোড: বি এস বি।

বাসে: লখনউ (৮ ঘন্টা), এলাহাবাদ (৩ ঘন্টা), গোরাক্ষ পুর (৮ ঘন্টা) এবং কানপুর (৯ ঘন্টা) থেকে রাজ্য সরকার দ্বারা চালানো বাস আছে।
প্লেনে: বারাণসী বিমানবন্দর শহরের কেন্দ্র থেকে ২৫ কিমি দূরে অবস্থিত। দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, খাজুরাহ ও বিশাখাপত্তনমথেকে প্রতিদিন ছারে এয়ার ইন্ডিয়া, জেট কনেক্ট, স্পেস জেট এবং ইন্ডিগো।

কোথায় থাকবেন:
প্রিয় শহর বরাণসীতে পাবেন পযর্টক ও তীর্থযাত্রীদের জন্য অতি সাধারণ লজ বা ধর্মশালা থেকে মাঝারি ও ভালো মানের হোটেল।ইউ পি ট্যুরিজমের রাহী ট্যুরিস্ট বাংলো (২২০৮৪১৩/৫৪৫), ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের কাছে প্যারেড কঠিতে পান্ডে ঘাটে অতি সাধারণ মানের বিষ্ণু রেস্ট হাউস (২৪৫০২০৬) এবং কালিকা গলিতে যোগি লজ (২৩৯২৫৮৮)।