দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে বিরিয়ানি ও কাবাব দুটিই বেশ জনপ্রিয়। তবে এই সুস্বাদু খাবার যদি মিলে যায় একই সাথে তবে তো রসনা প্রায় ষোল আনাই পূর্ণ। আর তাছাড়া মাঝে মাঝে স্বাদের ভিন্নতারও প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আর তাই স্বাদের ভিন্নতায় শিক কাবাবের বিরিয়ানি-
কাবাব তৈরি
মুরগির কিমা (রান ও বুকের মাংস) আধা কেজি (মুরগির টুকরাগুলো ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর হাড্ডি ছাড়িয়ে কিমা করুন। কিমাতে পানি থাকবেনা। ব্রেডক্রাম্বস বা টোস্ট বিস্কুটের গুঁড়া ১/৪ কাপ। গরম মসলাগুঁড়া ১ চা-চামচ। টালা ধনে ও জ়িরা গুঁড়া ১ চা-চামচ করে। আদা রসুন বাটা ১ টেবিল-চা্মচ করে। লালমরিচ ও গোলমরিচ-গুঁড়া ১ চা-চামচ করে। লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ। পেঁয়াজ বেরেস্তা ১/৪ কাপ (কিছুটা ভেঙে নিন)। পুদিনা ও ধনে পাতাবাটা বা মিহিকুচি ২ টেবিল-চামচ করে। ডিম ফেটানো ১টি। মাখন ৩ টেবিল-চামচ। চিজ কুচি করে নেওয়া ২ টেবিল-চামচ (ময়েস্ট ও জুসি হবে কাবাব)।
বিস্কুটের গুঁড়া ও চিজ বাদে সব মসলা, লবণসহ কিমায় ভালো করে মিশিয়ে নিন। এখন প্রয়োজন মতো বিস্কুটের গুঁড়া ও চিজ মিশিয়ে নিন।
দুহাত পানিতে ভিজিয়ে নিন। একমুঠ কিমার মিশ্রণ নিয়ে শিকে গেঁথে বা সাসলিক কাঠিতে গেঁথে ফ্রিজে এক ঘণ্টা রেখে দিন।
ফ্রাইপ্যানে ২ টেবিল-চামচ তেল বা ঘি দিয়ে কাবাবগুলো দিন। ঢেকে অল্প আঁচে ১০ মিনিট রাখুন। মাঝেমাঝে উল্টিয়ে দিন। বাদামি রং হয়ে আসলে নামিয়ে নিন।
গ্রেইভি তৈরি
টক দই আধা কাপ। তেল ২ টেবিল-চামচ। পেঁয়াজকুচি আধা কাপ। ধনে ও জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ করে। গরম মসলাগুঁড়া ১ চা-চামচ। লবণ স্বাদ অনুযায়ী। পাপরিকা বা মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ। আদা ও রসুন পেস্ট ২ টেবিল-চামচ করে। টমেটোকুচি ২ কাপ। টমেটো পিউরি আধা কাপ। দারুচিনি ৫ টুকরা, সবুজ এলাচ ৮টি। চিনি ১ টেবিল-চামচ।
একটি প্যানে তেল দিয়ে পেঁয়াজকুচি ও টমেটোগুলো নরম করে ভেজে নিয়ে বাকি সব মসলা ও আধা কাপ পানি দিয়ে একটু কষিয়ে নিন। গ্রেইভি ঘন হলে কাবাবগুলো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে চুলা বন্ধ করে দিন।
বারবিকিউ ফ্লেইভারের জন্য লাল গরম কয়লা একটি বাটিতে বা ফয়েলে নিয়ে বাটিটি কাবাবের প্যানের মাঝে রাখুন। উপর থেকে আধা চা-চামচ ঘি গরম কয়লাতে ঢেলে সঙ্গে সঙ্গে ঢেকে রাখুন প্যানটি।
বিরিয়ানি তৈরি
বাসমতী চাল ৪ কাপ বা ৩/৪ কেজি। আদার রস ১ টেবিল-চামচ। দারুচিনি ২ টুকরা। এলাচ ৩টি। তেজপাতা ২টি শাহিজিরা ১ চা-চামচ। কাঁচামরিচ ৫টি। লবণ স্বাদ মতো।
চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
পাতিলে ১০ কাপের মতো পানি দিন। আদাবাটা, লবণ, আস্ত গরম মসলা ও ১ টেবিল-চামচ তেল দিন। চালের পানি ঝরিয়ে নিন।
পানি ফুটে উঠলে চাল দিয়ে দিন। ভাত ৭০ ভাগ সিদ্ধ হলে চুলা বন্ধ করে ভাত থেকে পানি ঝরিয়ে নিন।
এবার লাগবে- পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ। আধা চামচ জাফরান, ১ চা-চামচ কেওড়ার জল ১/৪ কাপ দুধে গোলানো। গরম মসলাগুঁড়া ১ চা-চামচ। ঘি ২ টেবিল-চামচ। ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা কুচি।
একটি বড় প্যান নিন। ১ টেবিল-চামচ ঘি প্যানে মেখে দিন। দুই ভাগের এক ভাগ ভাত বিছিয়ে দিন। তার উপর কাবাবগুলো গ্রেইভিসহ বিছিয়ে দিন। এখন অর্ধেক বেরেস্তা, অর্ধেক কেওড়া-দুধ, ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা কুচি এবং গরম মসলা মাংসের উপর বিছিয়ে দিন।
বাকি ভাত মসলার উপর বিছিয়ে অবশিষ্ট দুধ, বেরেস্তা, ঘি, ধনে ও পুদিনাপাতা-কুচি ছিটিয়ে ঢাকনা ভালো ভাবে আটকিয়ে অল্প আঁচে দমে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর চুলা বন্ধ করে ভাত কাবাব মিশিয়ে নিন।
নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মজাদার শিক কাবাব বিরিয়ানি।
* রুটির লেয়ার ১ কাপ ময়দা, ১ টেবিল-চামচ বাটার ও লবণ ভালো করে মিশিয়ে পানি দিয়ে পরোটার চেয়ে কিছু শক্ত খামির বানিয়ে নিন।
এখণ বিরিয়ানি কোনো হাঁড়িতে বা বেইকিং পাত্রে বা ওভেন প্রুফ ডিশে নিয়ে উপরে পরোটা দিয়ে ঢেকে দিন। পানি লাগিয়ে পরোটার চারিপাশ আটকিয়ে দিন।
উপরে ডিম ব্রাশ করে গ্যাস ওভেন বা ইলেকট্রিক ওভেনে ১০ মিনিটের মতো রাখুন। এতে বিরিয়ানিটা অনেক্ষণ গরম থাকে আর ফ্লেইভার ভালো হয়।