সুগন্ধি সম্পর্কে প্রচলিত রয়েছে অবিশ্বাস্য সব ভুল ধারণা। এমনকি এর নাম সম্পর্কিত শব্দগুলো নিয়েও রয়েছে নানা বিভ্রান্তি। আসুন তবে জেনে নিই সেগুলো কিঃ
১. ইংরেজিতে “কোলোন” শব্দটি ব্যবহৃত হয় পুরষদের সুগন্ধি বুঝাতে, আর নারীদের বেলায় ব্যবহৃত হয় “পারফিউম” শব্দটি।” আসলে এই দুটি শব্দ দিয়ে কোনো সুগন্ধিতে থাকা তেলের পরিমাণের ভিন্নতা নির্দেশ করা হয়।
২. “সুগন্ধি সংরক্ষণ করা উচিৎ বাথরুমে”
তাপ ও আর্দ্রতা সুগন্ধিতে থাকা তেলকে দ্রুত ভেঙ্গে ফেলে। যার ফলে নষ্ট হয়ে যায় এর গন্ধ। তবে, কখনোই “নষ্ট” হয়না সুগন্ধি। বরং তা যেমন গন্ধ ছড়ানোর কথা ছিল তার চেয়ে একটু ভিন্নভাবে অনুভূত হয়।
৩. “ত্বকে সুগন্ধি ঘষে ঘষে লাগানো উচিত”
কিন্তু এর ফলে সুগন্ধিতে থাকা তেল ভেঙ্গে যায় এবং এর স্থায়ীত্ব কমে আসে। সুতরাং ত্বকে সুগন্ধি লাগানোর পর তাকে আপনাতেই শোষিত হতে দিন।
৪. “সকল সুগন্ধিই সমান শক্তিশালি”
কোনো সুগন্ধির শক্তি এর মধ্যে থাকা তেলের পরিমাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। শক্তিশালি সুগন্ধি স্বাভাবিকভাবেই বেশি গন্ধ ছড়ায়। আর অল্প পরিমাণ ব্যবহারেই তা যথেষ্ট ফল দেয়।
৫. “ সুগন্ধি কাগজে যেমন অনুভূত হয় মানবদেহের ত্বকেও তেমনই অনুভূত হয়”
সুগন্ধি ত্বকে থাকা তেলের সঙ্গে মিশে কেমন অনুভূত হবে কাগজে রেখে তার গন্ধ নেওয়ার মাধ্যমে তা অনুমান করা আসলে অসম্ভব। আর তাছাড়া কোনো কোনো সুগন্ধি ভিন্ন ভিন্ন লোকের ত্বকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে অনুভূত হয়।
৬. “দেহে মেঘের মতো করে সুগন্ধি ছিটিয়ে এর মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া উচিত”
প্রকৃতপক্ষে, শুকনো ত্বকে সরাসরি ও পরিমিত পরিমাণে সুগন্ধি ছিটানো উচিত। ঘাড় এবং বুকের মতো প্রাকৃতিকভাবে দেহের উষ্ণতর এলাকাগুলোতেই শুধু সুগন্ধি ছিটানো উচিত। কারণ এতে সহজেই দিনব্যাপী তা থেকে সমভাবে সুগন্ধি বের হতে থাকে। আর একটি মৌলিক নীতি হলো অতিরিক্ত সুগন্ধি ছিটানো যাবে না।
৭. “প্রয়োগকালের সময় থেকে শুরু করে জামা খোলার সময় পর্যন্ত সুগন্ধি একই রকম গন্ধ ছড়ায়”
অনেক সুগন্ধিই সারাক্ষণ একই রকম গন্ধ ছড়ায় না। বরং প্রয়োগের কিছুক্ষণ পর থেকেই এতে ভিন্নতা দেখা দেয়। আর এ ধরনের সুগন্ধি গুনগত মানের দিক থেকেও ভালো হয়।
৮.. “কোনো সুগন্ধির দাম যত বেশি এর গুনগত মানও ততই ভালো”
কথাটি সব সময়ই সত্য নয়। কারণ অনেক সস্তা সুগন্ধিও চড়া দামের কোনো ব্র্যান্ডের সুগন্ধির চেয়ে ভালো গন্ধ ছড়ায়।
৯ “কোনো সুগন্ধি যত বেশি শক্তিশালি হবে এর গন্ধও তত ভালো হবে”
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সুগন্ধিগুলোতে থাকা তেলের পরিমাণের ভিন্নতার কারণে সেগুলোর গন্ধের তীব্রতায় ভিন্নতা দেখা যায়। এর সঙ্গে কোনো সুগন্ধির ভালো বা খারাপ অনুভূত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে বিশেষ কোনো সুগন্ধির ক্ষেত্রে গন্ধ শক্তিশালি হওয়া বেশ কাজে দেয়। এমনকি একই ধরনের দুটি সুগন্ধি তেলের পরিমাণের ভিন্নতার কারণে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে গন্ধ ছড়াতে পারে।