ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে পবিত্র মাস রমজান। রমজান হচ্ছে ত্যাগ, প্রার্থনা, উদারতা এবং আত্মত্যাগের মাস। আমরা সবাই কমবেশি রমজানের সময় প্রার্থনা ও উপবাসের আধ্যাত্মিক উপকারগুলো সম্পর্কে সচেতন। কিন্তু আপনি হয়ত জানেন না দীর্ঘ একমাসব্যাপী রোযা রাখা কেন আপরনার জন্য সর্বোত্তম? আজ আমরা রোজা রাখার কয়েকটি বৈজ্ঞানিক কারণ সম্পর্কে জানবো। চলনু দেখে নেই রোজা রাখার কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ সম্পর্কে-
# রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
গবেষণায় দেখা গেছে, তিন দিনের জন্য উপবাস কেবল আপনার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকেই বৃদ্ধি করে না বরং এটি পুনরুৎপাদন ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে দেয়। যখন কয়েক ঘন্টার জন্য আপনার পাকস্থলী কোনো খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকে তখন এটি মানুষের শরীরকে আরো অধিক শ্বেত রক্তকোষ উৎপন্ন করতে উৎসাহিত করে; যা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটা শরীরের স্টেম সেলগুলোকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে এবং পুরো রোগ প্রতিরোধক সিস্টেমকে পুনর্নির্মাণ করতে শুরু করে।
# খারাপ আসক্তি থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করেঃ
রমজানের সঙ্গে রয়েছে আত্মনিয়ন্ত্রণের সম্পর্ক। খারাপ, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ত্যাগ করার শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে পবিত্র রমজান। পবিত্র এই মাসে ৩০ দিনের জন্য আপনি যাবতীয় আসক্তি ছেড়ে দেয়ার পরে পুনরায় ওই পথে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আপনার মধ্য অনুভব নাও হতে পারে। আপনার শরীর নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে। তাই খারাপ আসক্তি ছাড়ার জন্য রমজান হচ্ছে একটি আদর্শ সময়।
# ক্ষুধাকে কমিয়ে দেয়ঃ
৩০ দিনে সংযমে দিনের বেলায় আহার থেকে বিরত থাকায় এটি ধীরে ধীরে আপনার পেটকে অনেক সঙ্কুচিত করে দেয়। এতে করে আপনার মধ্য অল্প অল্প স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পূর্ণ আগ্রহ জন্মাবে। আপনি যদি আপনার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে চান সেক্ষেত্রে রমজান হচ্ছে আপনার জন্য উত্তম সময়। এটি আপনাকে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যতালিকা পুনর্বিন্যাসের জন্য উত্সাহ প্রদান করবে। পবিত্র মাস শেষ হয়ে গেলে এটি আপনার মধ্য কম ক্ষুধা অনুভূত হবে এবং আপনি বেশি বেশি খাওয়ায় প্ররোচিত হবেন না।
# শরীর অধিক পুষ্টি উপাদান শোষণ করেঃ
রমজানের সময় দীর্ঘ সময়ের জন্য রোজা আপনার বিপাকক্রিয়াকে উন্নত করে এবং আপনার শরীরকে খাদ্য থেকে আরো অধিক মাত্রায় পুষ্টি শোষণ করার সক্ষমতা এনে দেয়। এটি শরীরে ‘অ্যাডিয়েপনেক্টিন’ নামক হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে; যা দিনের বেলায় উপবাস এবং রাতের বেলায় দেরি করে আহারের সংমিশ্রণে উৎপন্ন হয়। এই হরমোন আপনার মাংসপেশিকে আরো পুষ্টি শোষনের সুযোগ করে দেয়।
# ফ্যাট বা চর্বির ভাঙ্গনঃ
ভোর রাত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা গ্লুকোজকে ব্যবহার করার মাধ্যমে শরীরকে মেদহীন করে তুলে। গ্লুকোজ হচ্ছে চর্বির শক্তির প্রধান উৎস। এছাড়াও, এটি অপরিহার্য প্রোটিনের জন্য পেশির ভাঙ্গন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। চর্বি শক্তির জন্য ব্যবহার করা হলে তখন তা ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং অবশেষে এটি আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে হ্রাস করে। ওজন হ্রাসের ফলে এটি ডায়াবেটিস এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।