প্রকৃতির এক অনবদ্য দান মেহেদী পাতা। এতে রয়েছে এন্টি ফাঙাল, এন্টি মাইক্রোবিয়াল, এন্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টিইনফ্লেমেটরী, কুলিং, হিলিং ও সিডেটিভসহ অনেক গুনাগুণ যা মানব দেহ ও মনের বিভিন্ন রোগ প্রশমনকারী। সাধারণত বিভিন্ন উৎসবে হাতে মেহেদী লাগায় আমরা। শুধু হাত আর নখ সাজাতেই নয়; চুল সুন্দর করতেও মেহেদী পাতার জুড়ি নেই। সপ্তাহে অন্তত একদিন মেহেদী পাতা দিয়ে চুলের পরিচর্যা করা উচিৎ। চুল উজ্জ্বল আর ঝলমলে করতে এবং খুশকি তাড়াতে মেহেদী পাতার কথা উল্লেখ না করলেই নয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক মেহেদী পাতার ওষুধি গুনাগুণ সম্পর্কে-
১। পায়ের জ্বলাপোড়া রোধ: তাজা মেহেদী পাতা ভিনেগারে ভিজিয়ে এক জোড়া মোজার ভিতরে রেখে দিন। এবার এই মোজাটি পায়ে সারারাত পরে থাকুন। এটি পায়ের জ্বলাপোড়া অনেক কমে যাবে।
২। মুখের ঘা ভাল করতে: এই মেহেদী দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন মাউতওয়াশ। মেহেদী পাতা গুঁড়ো পানিতে গুলিয়ে নিন। এবার এটি দিয়ে কুলকুচি করুন। এটি মুখের ঘা দ্রুত ভালো করে এবং মুখ জীবাণুমুক্ত করে তোলে।
৩। মাথাব্যথা হ্রাস করতে: মেহেদী গাছের ফুল মাথা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। মেহেদী গাছের ফুল পেস্ট করে এর সঙ্গে ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এটি কপালে অথবা ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এছাড়া আপনি মেহেদীর পেস্টও ব্যবহার করতে পারেন।
৪। খুশকি দূর করতে: খুশকি চুলের সবচেয়ে বড় শত্রু। এই খুশকি দূর করতে মেহেদী বেশ কার্যকরী। সরিষা তেল, মেথি, মেহেদি পাতা সিদ্ধ একইসঙ্গে যোগ করে এটি চুলে ব্যবহার করুন। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। এটি খুশকি দূর করে চুলকে করে তুলবে ঝলমলে সুন্দর।
৫। ঘামাচির জ্বালাপোড়া রোধ করতে: মেহেদীর পেস্ট পিঠ, ঘাড় এবং ঘামাচি আক্রান্ত অন্যান্য স্থানে লাগান। এটি ঘামচির চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করবে।
৬। বাতের ব্যথা রোধে: বাত এবং বাতজনিত সব রকম ব্যথা দূর করতে মেহেদী তেল বেশ কার্যকর। ব্যথার স্থানে মেহেদী তেল ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন। ভালো ফল পেতে কমপক্ষে এক মাস করুন ব্যবহার করুন এটি।
৭। জন্ডিসঃ আঙুলের মতো মোটা মেহেদি গাছের মূল অর্ধভাঙা আতপ চাল ধোয়া পানি দিয়ে ঘষে দুই চা চামচ পরিমাণ নিয়ে ৮-১০ চামচ ওই চাল ধোয়া পানি মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে দুই বার খেতে হবে। এভাবে চার-পাঁচ দিন খেলে জন্ডিসে উপশম হয়। এ সময় ডাবের পানি বা আখের রস খাওয়া যাবে না।
৮। শ্বেতপ্রদাহঃ ২৫ গ্রাম মেহেদিপাতা সিদ্ধ করে সেই পানিতে উত্তর বস্তি (ডুস দেয়া) দিলে সাদাস্রাব ও অভ্যন্তরে চুলকানি প্রশমিত হয়। স্থানভ্রষ্ট জরায়ুর ক্ষেত্রেও উপরোল্লিখিত পদ্ধতি প্রয়োগ করলে সুবিধা পাওয়া যায়।
৯। শুক্রমেহ রোগঃ মেহেদী পাতার রস এক চা চামচ দিনে দুই বার পানি বা দুধের সাথে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে উপকার পাওয়া যায়।