আর নয় এরোসল-কয়েল, এইবার মশা নিধন করবে মশাখেকো মাংসাশী গাছ। সৌখিন বা বাগান বিলাসীরা তাদের বারান্দায় বা ছাদের টবে বিভিন্ন ক্যাকটাস বা অর্কিড জাতীয় গাছ রাখেন। এইসব গাছ একদিকে যেমন আপনার আশেপাশের সৌন্দর্য বর্ধন করবে, তেমনি অন্যদিকে আপনার আশপাশের পরিবেশকে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত জীবের হাত থেকে রক্ষা করে। এই যাত্রায় সবার আগে আসে মশক ও বিভিন্ন কীটপতঙ্গের নাম। এসব গাছের এই বাড়তি উপকারিতার জন্য নার্সারিতেও আজকাল এদের রাখা হয় বিক্রির জন্য।
যারা ইতোমধ্যেই এই গাছগুলো বারান্দায় রক্ষনাবেক্ষন করা শুরু করেছেন উপকারটা তারাই পাচ্ছেন। বারান্দা বা বাসায় আর মশার উপদ্রব নেই। গাছগুলো সব মশা খেয়ে ফেলেছে। কি অবাক কাণ্ড! মশা বা পতঙ্গ মারতে অন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে না। এতে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সাশ্রয় হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে কয়েল, এরোসল ও বিভিন্ন কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সাধারণ মানুষজন রক্ষা পাচ্ছে। আর উপরি পাওনা হিসেবে সৌন্দর্যবর্ধন তো আছেই।
এইসব গাছের চাহিদা আমাদের দেশে কম হলেও আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দিন দিন ভারতের বাজারে এর চাহিদা হু হু করে বেড়ে চলেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, অনেকে শখের বশে বাগান করার জন্য এগুলা নিয়ে থাকেন। কিন্ত এতেই মিলে যায় বাড়তি উপকারিতা। কীটপতঙ্গ আর মশার উপদ্রব থেকে গাছগুলো রক্ষা করছে মানুষকে। এগুলো দেখেতেও আকর্ষণীয় রঙের হয়। ফলে পোকামাকড় সহজেই এর প্রতি আকর্ষিত হয় আর তখনি ভক্ষণ ঘটে তাদের। ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ, পিটচার প্ল্যান্ট এবং ডাচম্যান্স পাইপ দৃষ্টিনন্দন ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ। এসব গাছ কিন্তু কীটপতঙ্গ ও মশাকে আকর্ষণ করে আর ধরে ধরে খেয়ে ফেলে। ফলে বাড়িতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। এতে পরিবেশ দূষণ রোধ হয়।
এসব মাংসাশী উদ্ভিদের দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণও খুব সহজ। এগুলো বেশ শক্তপোক্ত গাছ। তাদের শুধু পর্যাপ্ত পানি আর আলো বাতাসের দরকার। বাকিটা মশা বা পতঙ্গ খেয়েই তারা টিকে থাকবে। যেমনঃ বাটারওর্ট। এরা আর্দ্রতাপূর্ণ পরিবেশ পছন্দ করে, হালকা ছায়াতে বাঁচে। তাই শীত প্রধান দেশে এদের লাগানো যায়। আরও আছে পিটচার প্ল্যান্ট। এদের নিয়মিত পানি দিতে হয়, কড়া রোদ থেকে বাইরে রাখতে হয়। এ ছাড়া ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপের জন্য শুধু সামান্য পানি দরকার প্রতিদিন আর সারাসেনিয়ার দরকার একটু আর্দ্রতা। উপকূলীয় অঞ্চলে এদের দেখা যায়। আর ডাচম্যান্স পাইপের জন্য সামান্য যত্ন দরকার। এভাবে মশা ও কীটখেকো গাছগুলো তাদের কাজ নিরলসভাবে করে চলেছে।