সারাদিনে আমাদের সঙ্গে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে, যাতে কি না মনে হয় পৃথিবীটা বড় কঠিন। এখানে বুঝি বিনয় কিংবা দয়ার কোনো স্থানই নেই। তবে প্রকৃতপক্ষে সবই নির্ভর করে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। যান্ত্রিক জীবনে নেতিবাচক ভাবনা দূর করা এবং সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য একটা বড় পদক্ষেপ হতে পারে উদার হয়ে ওঠা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি যদি উদারতা দেখান, তাহলে আপনার শরীরে অক্সিটসিন নামের এক হরমোন ছড়িয়ে পড়ে, যা মন ভালো করে দেয়। চলার পথে বয়স্ক কোনো ব্যক্তিকে রাস্তা পার করে দিয়ে, অসুস্থ কোনো প্রাণীকে সাহায্য করে কিংবা রোজ যে দোকানে চা খান তার দোকানীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করে দেখুন না -ভালো লাগায় মনটা ভরে উঠবে আর অনেকটা চাঙাও বোধ করবেন আপনি।
নিজের প্রতি উদার হন
যখন মানুষ নিজের প্রতি উদার হবে আর কেবল তখনই অন্যের প্রতি উদার হওয়া সম্ভব। মাঝে মাঝে এটাই হয় সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায় । নিজের ভেতরের ইতিবাচক অনুভূতিগুলোকে প্রাধান্য দিতে হলে যা করণীয় :
# প্রথমত, নিজের প্রতি সচেতন হন। পরিস্থিতি যত কঠিন হোক, চেষ্টা করুন শান্ত থাকতে। মনে মনে বলুন, ‘সব ঠিক আছে’। আপনার হয়ত বিশ্বাস হবে না, তবে সত্যিই এই বুলি মনকে শান্ত করতে অনেক কাজে দেয়। তবে চেষ্টা করেই দেখুনই না একবার!
# আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু ভালো গুণ আছে, ভেবে দেখুন আপনার ভালো গুণগুলো কি। নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করুন সবসময় । নিজের প্রতি উদার হন, তাহলে অন্যের প্রতিও সহজেই উদার হতে পারবেন।
প্রিয়জনের প্রতি উদারতা
প্রিয়জনের প্রতি উদার হওয়া-আর এই মানুষটি হতে পারে আপনার কোনো বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্য। এটি অনেকটাই সহজ, কারণ সেই মানুষটিকে আপনি এমনিতেই ভালোবাসেন।মন থেকে তার মঙ্গল কামনা করুন, সেই মানুষটি যেন ভালো থাকে এমন কিছু করার চেষ্টা করুন।
পরিচিত জনের প্রতি উদারতা
উদারতার জাল এবার ছড়িয়ে দিন আরেকটু দূরে। এমন কারও প্রতি উদার হওয়ার চেষ্টা করুন, যার প্রতি আপনার ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো রকমের আবেগ নেই। হতে পারে সে আপনার সহকর্মী যার সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হয়। তাকে নিয়ে ভালো কিছু ভাবার চেষ্টা করুন।
অপছন্দের কারও প্রতি উদারতা
এটি অনেকের কাছেই কঠিন বলে মনে হতে পারে। এমন কেউ যাকে আপনি পছন্দ করেন না, তাকে নিয়ে ভালো কিছু ভাবা কঠিনই বটে। তার যে ব্যাপারগুলো আপনার পছন্দ নয়, সেগুলো এক পাশে সরিয়ে চেষ্টা করুন তার কোনো ভালো দিক নিয়ে ভাবতে। অবশ্যই তার কোনো ভাল গুণ তো নিশ্চয় আছে, যা বের করতে পারলে আপনি নিজেই অবাক হবেন। এরপর তার প্রতি ইতিবাচক ভাবনার উদয় হতে আর দেরি হবে না।