পরিবেশ দূষণ বর্তমানে এই পৃথিবীর জন্য এক ভয়াবহ সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে এই দূষণ হু হু করে বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে বায়ু দূষণ আজ দিকে দিকে আলোচিত সমালোচিত হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে আমাদের ফুসফুসের উপর। ফলে আজকাল ফুসফুসের রোগের সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। তাছাড়া জনসংখ্যা বাড়ার সাথে বেড়ে চলেছে ধূমপায়ীর সংখ্যাও। এতে ফুসফুস ক্যান্সারের পাশপাশি ফুসফুসের নানাবিধ রোগের প্রসার চোখে পড়ার মতো। মোটকথা, পরিস্থিতি ক্রমেই পাগলা ঘোড়া হয়ে উঠছে। এ থেকে রক্ষা পেতে এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হাতে নিতে হবে।
এদিকে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি করে শাক-সবজি এবং ফলমূল খেলে একদিকে যেমন তামাকের কু-প্রভাবের হাত থেকে ফুসফুস রক্ষা পায় সেই সঙ্গে ফুসফুস সংক্রান্ত নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। আসলে শাক সবজিতে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা ফুসফুসকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। ফলে কোনও রোগই সহজে ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে না। তাহলে আসুন এমন গুণ সমৃদ্ধ কিছু উপায়ের কথা বর্ণনা করা যাকঃ
সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ুনঃ প্রতিদিন কর্নফ্লাওয়ার, বাঁধাকপি, বরবটি এইসব খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে থাকা সালফোরোফেন উপাদান ফুসফুস ক্যান্সার থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে।
বেশি করে পেঁপে খানঃ পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন থাকে যা শরীরে যত বেশি থাকে তত বেশি ফুসফুসের উপর ধূমপান ও পরিবেশ দূষণের পরিমাণ কম থাকে। লেবু ও গাঁজরেও এটি অত্যাধিক পরিমাণে থাকে। তাই চিকিৎসকরা এগুলো ফুসফুসের রোগে কম বেশি প্রেসক্রাইব করে।
সামুদ্রিক মাছ প্রতিদিনঃ স্যামন, ম্যাকারেল এবং সার্ডিন জাতীয় মাছ বেশি বেশি খেতে হবে। এতে থাকা অমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ফুসফুসকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে।
রেডমিট খাওয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধঃ মাংস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় বিশেষ করে লাল মাংস। তাই মাংস খাওয়া যতটা পারা যায় পরিহার করতে হবে।
রোজ পালংশাক খানঃ ফলেট ফুসফুসের জন্য কার্যকরী একটি উপাদান। আর এটি পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে থাকে। তবে হ্যাঁ যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা এটি অবশ্যই পরিহার করবেন।
এছাড়াও অনেক মানুষ আছেন এই পৃথিবীতে যারা পরিবেশ দূষণের সংস্পর্শে না থেকেও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন। ধূমপান না করেও ধূমপায়ীর সাথে থাকার কারণে ধূমপান জনিত সমস্যায় ভুগছেন। এমন মানুষের হার পৃথিবীতে প্রায় ১৫%। তাই বিজ্ঞানীরা সবার জন্য কিছু নিয়ম পালনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, প্রতিদিন এই নিয়মগুলো ফলো আপ করলে ফুসফুসের সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে। নিয়মগুলো হলোঃ
# প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ১ কাপ হারবাল চা পান করুন। এতে শরীরের সমস্ত টক্সিন বাহিরে বের হয়ে যাবে এবং ফুসফুস নিরাপদ থাকবে।
# সকালে নাস্তার আগে আধা লিটার পানিতে ২ টি লেবু চিপে তা পান করুন।
# আঙুর বা আনারসের জুস বানিয়ে পান করুন। এই দুটি ফলের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমদের দেহের শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার পদ্ধতিকে উন্নত করে।
# সকালে ও দুপুরের খাবার তালিকায় গাজরের জুস রাখুন। এটি আমাদের রক্তে ক্ষারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে শ্বাস প্রশ্বাসে ফুসফুসকে সাহায্য করে।
সুতরাং, ফুসফুস আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই এটিকে সুস্থ, সবল ও কার্যক্ষম রাখতে এর পরিচর্যা করার কোনো বিকল্প নেই।