Home ইসলাম ও জীবন বিশ্বনবী নির্ধারিত ফিতরার পরিমাপ

বিশ্বনবী নির্ধারিত ফিতরার পরিমাপ

আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত আর্থিক ইবাদতগুলোর মধ্যে ফিতরা অন্যতম। ফিতরা আদায়ের উদ্দেশ্য হলো রোজা পালনে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্তি লাভ করা। নামাজের ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে যেমন সাহু সিজদা আদায় করতে হয় তেমনি রমজানের ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতেই ফিতরা আদায় করতে হয়। আজ আমরা জানবো বিশ্বনবী নির্ধারিত ফিতরার পরিমাপ সম্পর্কে-

রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করতেই রমজানের শেষ রোজায় পরিবারের ব্যয় নির্বাহের পর নিসাব পরিমাণ মালের অধিকারীর জন্য সাদকাতুল ফিতরকে আবশ্যক করা হয়েছে। আর যাদের নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই কিন্তু ঈদের দিনের খরচের পরও তাদের নিকট বাড়তি অর্থ-সম্পদ থাকে তারাও ফিতরা আদায় করতে পারবেন।

তাছাড়া রমজান মাস জুড়ে রোজা পালনের পর ঈদের দিন যাতে ধনী-গরিব উভয়ে উত্তম পোশাক ও উন্নতমানে খাবার খেতে পারে; অন্যান্য সময়ের মতো অভাব অনুভব করতে না হয় সে জন্যই অভাবি ও গরিব-দুঃখীদের মাঝে এ ফিতরা বিতরণ করতে হয়।

ফিতরার ঘোষণা

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের প্রত্যেক স্বাধীন, নারী-পুরুষ, ছোট-বড়, সবার ওপর সাদকায়ে ফিতর হিসেবে এক সা’ খেজুর অথবা এক সা’ জব ফরজ করেছেন এবং (ঈদের) নামাজের বের হওয়ার আগেই এটা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারি ও মুসলিম)

ফিতরার পরিমাণ

হাদিসের বর্ণনায় ফিতরার সাদকা হচ্ছে এক সা’। এখানে ‘সা’ বলতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জামানায় মদিনায় প্রচলিত ‘সা’ উদ্দেশ্য। পৃথিবীর অন্য কোথাও যদি ‘সা’ এর হিসাব প্রচলিত থাকে আর তা যদি বিশ্বনবি ঘোষিত ‘সা’ এর বিপরীত হয়; তবে তা গ্রহণযোগ্য নয়।

হাদিস বর্ণনার সময়ে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত ‘সা’ অনুযায়ী বর্তমান সময়ের ওজন বা পরিমাপ হলো উন্নত মানের গমের ওজন হবে ২ কেজি ৪০ গ্রাম।

অবশ্য চালসহ ইত্যাদি সলিট খাদ্য-দ্রব্যের ওজন ২ কেজি ৪০ গ্রামের চেয়ে বেশি হবে। মোট কথা এক সা’ পরিমাণ খাদ্য দ্রব্যের ওজন হবে আড়াই কেজি।

ফিতরা নির্ধারণ

সে হিসেবে এ বছর ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ঘোষিত জনপ্রতি ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৬৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ১৯৮০ টাকা।

যদি কেউ আরো বেশি ফিতরা আদায় করতে চায়; ইসলামে কোনো বাধা নেই। গরিব-দুঃখীর মুখে হাসি ফোটাতে কেউ যদি বেশি দান করে; আল্লাহ তাআলা তার যথাযথ প্রতিদান প্রদান করবেন।

পরিশেষে…

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত নির্ধারিত পন্থায় ফিতরা আদায় করা নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারীদের ওপর আবশ্যক। আর যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন কিন্তু সাবলম্বী; তাদেরও ফিতরা আদায় করে বরকত লাভ করা উচিত।

গরিব দুঃখীর মুখে ঈদের দিন হাসি ফোটাতে দানের ক্ষেত্রে ফিতরার নিয়তে বেশি বেশি দান করা মুসলিম উম্মাহর একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে গরিব-অসহায়দের মাঝে মুক্ত হস্তে দান করি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষিত ফিতরা যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।