আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা প্রায় প্রতিদিনই কম বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খেয়ে থাকি। কিন্ত আমরা কয়জনই বা এদের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন? তাছাড়া আমরা প্রায়ই নিত্য ব্যবহার্য এইসব শাকসবজি খোসা ছাড়িয়ে খেতে অভ্যস্ত। কিন্ত অনেক শাকসবজি আছে যেগুলোতে এর মূল অংশ থেকে এর খোসাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান আছে। পুষ্টিবিদদের মতে, এমন কিছু সবজি ও ফল আছে যা খোসা না ছাড়িয়ে খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এর খোসাতেই পুষ্টির উপাদান বেশি থাকে। তাই এসব সবজি ও ফল খোসাসহই খাওয়া উচিৎ। তাই এদের সম্পর্কে জানা আমাদের অতীব প্রয়োজন। নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে হলে এদের পূর্ণাঙ্গ পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। তাই আজ আমরা আপনাদের সুবিধার্থে এনেছি সেই বিশেষ টিপস যার মাধ্যমে আপনাদের এইসব খোসা সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফলমূল সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা জন্মাবেঃ
খোসাসহ যেসব সবজি খাওয়া হয় তার মধ্যে আলু প্রধান। বিশেষজ্ঞদের মতে, আলুর খোসার নিচে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি উপাদান থাকে। আলুর মধ্যে উপস্থিত ভিটামিন ‘বি’ ও ‘মিনারেল’ এর ২০ শতাংশই থাকে আলুর খোসায়। শুধু তাই নয়, মোট ফাইবারের অধিকাংশই থাকে আলুর খোসায়। খোসা ছাড়ালে এর পুষ্টিগুণ অনেকটাই কমে যায়। তাই আলু খোসাসহ খাওয়া উচিত।
অনেকে খোসার জন্য বেগুন খেতে চান না। এমনকি খেলেও খোসা ছাড়িয়ে খান। কিন্ত বেগুনের খোসায় নাসুনিন নামে একটি ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট থাকে যা সেল ড্যামেজ রুখতে এবং বিভিন্ন অসুখ বিসুখে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ফলে বেগুনের খোসা ছাড়িয়ে খেলে অ্যান্টি-এজিংয়ের বিরুদ্ধে লড়াইতে আপনাকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই বেগুন খাবেন খোসাসহ।
আমরা অনেকেই খোসাসহ সালাদ খেতে চাই না। কিন্ত শসার খোসায় আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেম্ট ও ফাইবার। যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং ইমিউনতন্ত্রকে শক্তিশালী রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই শসা খাবেন খোসাসহ।
মিষ্টি আলুও খোসাসহ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এর খোসায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, পটাশিয়াম ও বিটা-ক্যারোটিন। তাই খোসাসহ খেলে এই উপাদানগুলো স্বভাবতই বাদ পড়বে আপনার ডায়েট থেকে। তাই সাবধান হন এখনই।
এবার আসুন আপেলের ক্ষেত্রে। আপেল আমরা খোসাসহ খাই ঠিকই। কিন্ত তারপর চিবিয়ে ফেলে দেই। কিন্ত আপনি জানেন কি এই খোসায় থাকে বিপুল পরিমাণে ফাইবার জি-এক্স। এছাড়াও থাকে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত ট্রিটারপেনয়েডস যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ইমিউনতন্ত্র গড়ে তোলে। তাই আপেল কখনই খোসা ছাড়া খাওয়া বা চিবিয়ে ফেলে দেয়া উচিত নয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে লাভের চেয়ে লোকসানের খাতাটাই ভারি হবে বেশি।
গাজরের খোসায়ও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেম্ট। ফলে খোসা ছাড়ালে গাঁজর অনেকটাই পুষ্টিহীন হয়ে পড়ে। তাই গাঁজর সবসময় খোসা না ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে রান্না করা উচিত।
সুতরাং আমরা কি খাচ্ছি, কেন খাচ্ছি তা আগে জানতে হবে। জীবনধারণের সাথে সম্পৃক্ত প্রত্যেকটা জিনিষেরই সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। আর তাতেই আমরা ভালো থাকবো, দেশ ভালো থাকবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর আবাস্থল উপহার দিতে পারবো।