বিড়ালের অতি সামান্য কামড়/আচড়ে ভ্যাক্সিন দিব কিনা? প্রায়শই এই ব্যাপারটি নিয়ে অনেককে স্ট্যাটাস দিতে দেখি। অনেকেই ডিসিশন নিতে পারেন না যে কি করবেন। আবার চিকিৎসক হিসেবে আমাদেরকেও আত্নীয়-স্বজনদের মাঝে পরামর্শ দিতে হয়। ভ্যাক্সিন কি আসলেই নিতে হবে নাকি হবে না, না নিলে আবার মনের মধ্যে খুতখুতি থেকে যায়, পরে যদি কিছু হয়। একটি পরিসংখ্যান দিয়ে শুরু করি। বাংলাদেশে প্রধানত বে-ওয়ারিশ কুকুরের মাধ্যমে ৯১% এবং গৃহপালিত বিড়ালের মাধ্যমে মাত্র ৫% জলাতংক রোগ ছড়ায়। কিন্তু তবুও কুকুরের চেয়ে বিড়ালের কামড়/আচড় বেশি বিপদজনক হতে পারে। এর কারন হল, কুকুরের কামড়ে হয় blunt wound যা widely exposed but superficial হয় সাধারণত deep woundও হয়, তখন সেটা WHO category-III তে পড়বে। আর বিড়ালের কামড় বা আচড় হল বিড়ালের দাঁত ও নখর সূচের ন্যয় চোখা ও ধাঁরালো)। So কুকুরের কামড়ের স্থানে ক্ষারযুক্ত সাবান/ডিটারজেন্ট দিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেললে saliva containing rabis virus এর glycoprotein আবরন নষ্ট/ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু বিড়ালের কামড়/আচড় দ্বারা ক্ষতস্থান কাজ হবে না।
জলাতঙ্ক ভাইরাস প্রবেশের পর যদি টিকা না নেওয়া হয়, তাহলে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর প্রায় সব ক্ষেত্রেই মৃত্যু অনিবার্য। তাই কোনো প্রাণীর কামড় খাওয়ার পর অবিলম্বে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। ভ্যাকসিনের ডোজ এবং চিকিৎসার নিতে হবে। জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের ডোজ সাধারণত ০, ৩, ৭, ১৪ এবং ২৮তম দিনে নেওয়া হয়। এই ভ্যাকসিন মাংসপেশিতে দেওয়া হয়। ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার পর আয়োডিন সলিউশন লাগানো এবং ক্ষতস্থান খোলা রাখা উচিত।যদি কেউ আগে জলাতঙ্কের টিকা নিয়ে থাকেন এবং তিন মাসের মধ্যে আবার কুকুর বা বিড়ালের কামড় খান, তাহলে পুনরায় টিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে তিন মাসের পর এমনটি হলে দুই ডোজ টিকা নিতে হবে।জলাতঙ্ক সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।