ঋতুরাজ বসন্তের উদাস হাওয়া ইতোমধ্যে স্বাগত জানিয়েছে বৈশাখের ঝড়ো হাওয়াকে। প্রকৃতিতে যেন চলছে বর্ষবরণের ধুম আয়োজন। এরই মধ্যে মন গেয়ে ওঠে ‘এলো রে এলো বৈশাখ’।
আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা ১৪২৪ সনের প্রথম দিন। পুরাতন বছরের জরাজীর্ণ দূর করে নতুনের কেতন উড়িয়ে বৈশাখ এসেছে বাংলাকে নবরূপ দিতে। অতীতের সকল গ্লানি মুছে বাঙালি আজ ফিরে পাবে নবপ্রাণ।
হাজার বছরের ইতিহাসে বর্ষবরণের আবেগের কথা গেঁথে আছে মর্মে মর্মে। আর তাই বাঙালির সার্বজনীন উৎসব বর্ষবরণের মহা আয়োজনে মেতে উঠেছে গোটা দেশ।
বৈশাখী উৎসবের অন্যতম প্রধান আয়োজন বৈশাখী মেলা। মেলাতে দেখা যায় নানা রকম কুটিরশিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠাপুলির আয়োজন। অনেক স্থানে আবার ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তাভাত খাওয়ারও ব্যবস্থা থাকে। এদিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন যার মধ্যে রয়েছে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তির মতো জনপ্রিয় খেলাধুলা।
এদিকে রাজধানী ঢাকার পহেলা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে রমনা বটমূল। এখানে ছায়ানটের সঙ্গীতানুষ্ঠানের মাধ্যমে আহ্বান জানানো হয় নতুন বছরের সূর্যকে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিকসন্ত্রাসের প্রতিবাদে মূলত ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানটের এ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা।
বৈশাখী উৎসবের আরেকটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে সকালে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। এতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় রঙ-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিলিপি। ১৯৮৯ সাল থেকে এ মঙ্গল শোভাযাত্রা সূচনা বলে জানা গেছে। গত বছরের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘বিশ্ব অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ ঘোষণা করে ইউনেস্কো।