বিশ্বজুড়ে চিকিৎসকরা দীর্ঘ সময় বসে থাকার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সতর্ক করে আসছেন অনেক দিন ধরেই। এবার আর বিষয়টি নিয়ে বসে বসে ভাবলে চলবে না। এবার সময় এসেছে উঠে দাড়ানোর। কারণ দীর্ঘ সময় বসে বসে কাজ করলে আয়ুক্ষয় হয়। এটা অনেকটা ধূমপানের মতই ক্ষতিকর।
দিনে একটানা ৬ ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে বসে থাকলে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, মাংসপেশী শক্ত হয়ে যাওয়া, রক্ত চলাচল হ্রাস এবং এন্ডরফিন (যে হরমোনগুলো ভালো অনুভূতি জাগায়) কমে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আরো ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে, নিয়মিত শরীরচর্চাতেও বসে থাকার এই ক্ষতিকর প্রভাব পুরোপুরি দূর হয় না। আর সে জন্যই বলা হয় ‘বসে থাকা হচ্ছে নতুন ধূমপান’। অবশ্য কাজ তো আর দৌড়াতে দৌড়াতে করা যায় না। কাজেই বসতে আমাদের হবেই। তবে কিছু উপায় মেনে চললে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
বাঁচতে হলে জানতে হবে
প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে টানা কতক্ষণ আপনাকে বসে থাকতেই হয়। এক্ষেত্রে নিজেকে প্রশ্ন করুন, “আমার দেহ আজ কি করেছে? আমি কি একইভাবে বসে ছিলাম? আমি কি আর কিছু করেছি?”
এবার প্রতিদিনের কাজের তালিকায় বেশি করে হাঁটা-চলা করার বিষয়টি যোগ করুন ।
আর চেষ্টা করুন:
- ১. অল্প সময়ের জন্য হলেও প্রতিদিন শরীরচর্চা করার।
- ২. যাতায়াতের সময় বেশি সময় দাড়িয়ে থাকার চেষ্টা করুন ।
- ৩. মধ্যাহ্ণভোজের বিরতিতে কিছুটা হাঁটাহাটি করুন।
- ৪. সামাজিকতা রক্ষার বিষয়টি হাঁটতে হাঁটতে করার চেষ্টা করুন।
ছোট্ট পরিবর্তনে বড় লাভ
গবেষণায় দেখা গেছে, আধা ঘণ্টা বসে থাকার পর দু মিনিটের জন্য উঠে দাড়ালে বসে থাকার ক্ষতিকর প্রভাব অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। অফিসে ছোট্ট কিছু পরিবর্তন এনে আপনি টানা বসে থাকার ঝুঁকি কমিয়ে ফেলতে পারেন খুব সহজেই।
- আপনার প্রিন্টারটি কম্পিউটারের সঙ্গে না রেখে একটু দূরে সরিয়ে রাখুনক।এতে আপনাকে প্রতিবার প্রিন্ট আউট নেয়ার জন্য চেয়ার ছেড়ে উঠতেই হবে।
- পানি পান করার এমনিতেই রয়েছে অনেক সুফল।একটি পানির বোতল আপনার সামনে রাখুন আর সেখান থেকেই পানি পান করুন,কারণ বোতল খালি হলে তা ভরার জন্য আপনাকে উঠতেই হবে।
- নিজের ডেস্কে সারাক্ষণ মুখ গুজে না থেকে সহকর্মীদের খোঁজ-খবর নিন।ফোনে বা ই-মেইলে জরুরি খবরটি না দিয়ে নিজেই উঠে যেতে পারেন ।
- মিটিং এ সারাক্ষণ বসে না থেকে মাঝে মাঝে উঠে দাঁড়াতে পারেন।
- বসে থাকার সময় বসার ভঙ্গি কিছুক্ষণ পর পর বদলান।
তবে আর দেরি না করে এবার নিজের জন্য উঠে দাঁড়ান আর এগিয়ে যান সুস্বাস্থ্যের দিকে।